Header Ads

বড় চমক আসছে "বিএনপির স্থায়ী কমিটিতে"




একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভরাডুবির পর আবার ঘুরে দাঁড়াতে নানামুখী উদ্যোগ নিচ্ছে বিএনপি। এর অংশ হিসেবে শিগগির বিএনপির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটি পুনর্গঠন করা হচ্ছে। পুনর্গঠিত কমিটিতে বেশ ক’জন নতুন মুখ আসছেন। বয়সজনিতসহ বিভিন্ন কারণে বাদ পড়ছেন দু-তিনজন সিনিয়র নেতা। নতুন মুখ হিসেবে স্থায়ী কমিটির ৭টি পদে স্থান পাচ্ছেন দলের কয়েকজন ভাইস চেয়ারম্যান ও দল-সমর্থিত একজন পেশাজীবী। একই সঙ্গে দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদ ও জাতীয় নির্বাহী কমিটিও পুনর্গঠন করা হবে।
‌‌‌‌‌দলীয় সূত্র বলছে, এ ব্যাপারে দলের কারাবন্দি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও লন্ডনে অবস্থানরত ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দলের নীতিনির্ধারকদের বিশেষ নির্দেশনা দিয়েছেন। পুনর্গঠনের এ উদ্যোগে দলের নিষ্ফ্ক্রিয় ও আত্মগোপনে থাকা নেতারাও সক্রিয় হয়ে তদবির-লবিং শুরু করেছেন।
সূত্র আরো জানায়, বিএনপির স্থায়ী কমিটির নতুন সদস্য হওয়ার তালিকায় এরই মধ্যে আলোচনায় আছেন বেশ কয়েকজন। তারা হলেন- ভাইস চেয়ারম্যান শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন, আবদুল্লাহ আল নোমান, মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, সেলিমা রহমান, আবদুল আউয়াল মিন্টু, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, মোহাম্মদ শাহজাহান, অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন, দল-সমর্থিত পেশাজীবী ড. মাহবুব উল্লাহ প্রমুখ।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, নির্দলীয় সরকারের অধীনে দ্রুত অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন এবং বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে আন্দোলনের ডাক দেবেন তারা। সরকারকে দাবি আদায়ে বাধ্য করতে বিএনপিকে পুনর্গঠন ও শক্তিশালী করা হবে। এ ক্ষেত্রে দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পরামর্শে তারা কাজ করছেন।
সূত্র মতে, ২০১৬ সালে বিএনপির ষষ্ঠ জাতীয় কাউন্সিলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ১৯ সদস্যের জাতীয় স্থায়ী কমিটির মধ্যে দুটি পদ শুরু থেকেই শূন্য ছিল। নতুন করে স্থায়ী কমিটির তিন সদস্য তরিকুল ইসলাম, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আ স ম হান্নান শাহ ও এম কে আনোয়ারের মৃত্যুতে আরও তিনটি পদ শূন্য হয়। এ ছাড়া দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জেনারেল (অব.) মাহবুবুর রহমান ও ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া অসুস্থ ও বয়োবৃদ্ধতার কারণে অবসর নিচ্ছেন। এ পরিস্থিতিতে বর্তমানে স্থায়ী কমিটির ১৯টির মধ্যে মোট সাতটি পদ শূন্য।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জেনারেল (অব.) মাহবুবুর রহমানও বলছেন, বয়সজনিত কারণে তিনি আগের মতো ভূমিকা রাখতে পারছেন না। এ পরিস্থিতিতে তিনি অবসর নেওয়ার চিন্তাভাবনা করছেন। বর্তমানে দলের প্রয়োজনে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে- এমন তরুণ নেতাদের স্থান ছেড়ে দেওয়া উচিত বলেও মনে করেন তিনি।
স্থায়ী কমিটির সদস্য হওয়ার আলোচনায় থাকা বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু বলেন, উদ্ভূত পরিস্থিতিতে স্থায়ী কমিটির মাধ্যমে দল পরিচালিত হচ্ছে। কাজেই স্থায়ী কমিটির শূন্য পদগুলো পূরণ করে শক্তিশালী করা প্রয়োজন। দলের নেতাকর্মীরাও তাই মনে করেন। কাকে সদস্য করা হবে- সে বিষয়ে দলের কাউন্সিলে চেয়ারপারসনকে ক্ষমতা দেওয়া আছে। যাদেরকে দিলে স্থায়ী কমিটি শক্তিশালী হবে, তিনি তাদের মনোনীত করবেন।
জানা যায়, দল পুনর্গঠনে নেতাদের নাম চূড়ান্ত করতে খুব শিগগির বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যরা দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করার অনুমতি চাইবেন। সাক্ষাতের অনুমতি পেলে তারা দল পুনর্গঠনসহ সার্বিক রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে করণীয় নিয়ে চেয়ারপারসনের পরামর্শ নেবেন। যদি কারা কর্তৃপক্ষ স্থায়ী কমিটির সব সদস্যকে সাক্ষাতের অনুমতি না দেয়, তাহলে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বা আইনজীবীরা সাক্ষাৎ করে তার দিকনির্দেশনা নেবেন।
স্থায়ী কমিটির নতুন সদস্য হিসেবে আলোচনায় থাকা বিএনপির অপর ভাইস চেয়ারম্যান ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেছেন, কোন নেতাকে দলের জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য করা হবে, তা দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত দেবেন।
সূত্র জানায়, স্থায়ী কমিটির পাশাপাশি বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান পদমর্যাদায় চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদও পুনর্গঠন করা হবে। বর্তমানে ৭৩ সদস্যবিশিষ্ট উপদেষ্টা কমিটির মধ্যে ৫ জন সদস্য মারা গেছেন। তারা হলেন- হারুন-উর রশীদ খান মুন্নু, ফজলুর রহমান পটল, আখতার আহমেদ সিদ্দিকী, নূরুল হুদা ও সঞ্জীব চৌধুরী। দল সমর্থিত বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনে যারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন তাদের মধ্য থেকে এই ৫টি শূন্য পদ পূরণ করা হবে। একই সঙ্গে যে নেতাদের দলের ভাইস চেয়ারম্যান করা যাচ্ছে না, তাদেরকেও উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য করা হবে।

No comments

Powered by Blogger.